আমাদের দেশে বছরের বিভিন্ন ঋতুতে বিশেষ বিশেষ পিঠা খাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। তাছাড়া বাড়িতে অতিথি এলে কম করে হলেও দু’তিন পদের পিঠা খাওয়া গ্রামবাংলার মানুষের চিরায়ত ঐতিহ্য হিসেবে বিবেচিত। কালের বিবর্তণে এ ঐতিহ্য এখন ম্লান হয়ে আসছে।
তবে শীত এলে বাংলার ঘরে ঘরে এখনো পিঠা তৈরির উৎসব শুরু হয়। অগ্রহায়ণের নতুন চালের পিঠার স্বাদ সত্যিই বর্ণনাতীত। শীতের পিঠার স্বাদের কথা বলতে গিয়ে অনেকেই ছন্দে ছন্দে বলেন, ‘শীতের পিঠা ভারি মিঠা’। চুলার পিঠে বসে পিঠা খাওয়ার শৈশব স্মৃতি সবারই কম বেশি রয়েছে। ‘পৌষ-পার্বণে পিঠা খেতে বসে খুশিতে বিষম খেয়ে, আরও উল্লাস বাড়িয়াছে মনে মায়ের বকুনি খেয়ে।’- কবি সুফিয়া কামাল তার কবিতায় পিঠা খাওয়ার দৃশ্য এভাবেই তুলে ধরেছেন।
এক সময় শুধু গ্রামের মানুষই পিঠা খেত। শহুরে ব্যস্ততার কারণে পিঠার স্বাদ নিতে নগরজীবীদের কেউ গ্রামে গিয়ে পিঠা খেয়ে আসতো। অথবা গ্রাম থেকে শহরে বসবাসকারী প্রিয়জনদের জন্য পিঠা তৈরি করে পাঠাতো কেউ কেউ। কিন্তু এখন সময় বদলের সঙ্গে সঙ্গে সেই দৃশ্যপটও আমূল বদলে গেছে। এখন গ্রামের মত শহরেও শীতের সব ধরনের পিঠা পাওয়া যায়।
তাই মুখরোচক খাবার হিসেবে পিঠার স্বাদ গ্রহণ ও জনসমক্ষে একে আরো পরিচিত করে তুলতে মেহেরপুর সরকারি কলেজ এর উদ্যোগে দিনব্যাপী পিঠা উৎসব-২০২০ আয়োজন করা হয়। মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
সকালে সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শফিউল ইসলাম সরদার ফিতা কেটে পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন। পরে সেখানে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
পরে সেখানে এক পিঠা উৎসব চলাকালে সেখানে পিঠা নিয়ে আড্ডার আয়োজন করা হয়। জেলা প্রশাসক মোঃ আতাউল গনি, পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী,সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শফিউল ইসলাম সরদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম, প্রফেসর আব্দুল মজিদ, ডঃ গাজী রহমান, পিঠা উৎসব কমিটির আহবায়ক সহযোগী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আলামিন, প্রভাষক বশির উদ্দিন প্রমুখ আড্ডাতে অংশগ্রহণ করেন।
এদিকে পিঠা উৎসব আড্ডাতে অন্যদের মধ্যে মেহেরপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুস সালাম বাঁধন, কলেজ শাখা সভাপতি আবিদ হোসেন আসিফ, সম্পাদক কুতুবউদ্দিন, ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ রানা, সকল সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সরকারি কলেজে অনুষ্ঠিত পিঠা উৎসবে ২৬ টি স্টলে শতাধিক ধরনের পিঠা স্থান পায়। এদিকে পিঠা উৎসব উপলক্ষে কলেজ প্রাঙ্গণ এক উৎসব নগরীতে পরিণত হয়।